পোয়াল ছাতু চাষ পদ্ধতি | পোয়াল ছাতু বীজ | Mushroom Farming
আপনি কোনোদিন ভেবেছেন যে আপনার বাড়ির ফাঁকা জায়গায় বা বাড়ির ছাদের যদি কোনো জায়গায় ফাঁকা আছে তবে আপনি সেই জায়গায় থেকে প্রতি মাসে একটি মোটা অংকের টাকা ইনকাম করতে পারবেন। অল্প খরচাতে আর মাত্র ১৫ দিনের মধ্যে। আজকে এই নিয়েই একটি উপায় ও পদ্ধতি বলবো। পুরো লেখাটি পড়ুন বুঝতে পারবেন।
আজকে আমরা পোয়াল ছাতু চাষ পদ্ধতি নিয়ে কথা বলবো - এই পোয়াল ছাতু চাষে বেশী খরচা নেই। আর আপনি ১০-২০ দিনের মধ্যেই ইনকাম করতে পারবেন। কারণ মাশরুম বা পোয়াল ছাতুর বাজারে অনেক চাহিদা। আর এই খড় ছাতুতে প্রচুর পরিমান প্রোটিন থাকে। অনেক সময় ডাক্তার ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন এই পুয়াল ছাতু খাওয়ার জন্য। তো চলুন পোয়াল ছাতু চাষ পদ্ধতি-
পোয়াল ছাতু আসলে কি :-
পোয়াল ছাতু যারা গ্রামের মানুষ বা যারা গ্রামে বসবাস করে তারা অবশ্যই ভালো ভাবে চেনেন। পোয়াল ছাতু সাধারণত খড়ের গাদায় বা যে জায়গাতে খড় রাখা হয় সেই স্থানে হয়। পরে খড় পচে এক ধরনের ছাতু ফুটে উঠে, ছাতুর রং সাদা ও ধূসর কালারের হয়। এটাই খড় ছাতু নামে পরিচিত। এর ইংলিশ নাম বা বৈজ্ঞানিক নাম হলো - Volvariella volvacea. আবার কেউ -Paddy Straw Mushroom বলেও ডাকে।
পোয়াল ছাতুর গুনা গুন :-
পোয়াল ছাতুকে প্রোটিন এর উৎস বলে জানা যায়। এই পোয়াল ছাতু বা খড় ছাতুতে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন থাকে। যা মানব শরীর এর জন্য খুবই ভালো। শরীরের কোষ গঠন, পেশীকে মজবুত করা, ও শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে থাকে।
এছাড়াও খড় ছাতু বা পোয়াল ছাতুতে প্রচুর পরিমানে Vitamin B, Vitamin C, Iron, Potassium, Phosphorus ইত্যাদি পাওয়া যায়।
এই জন্য পোয়াল ছাতুর বাজারে অনেক চাহিদা, চলুন এবার জানা যাক চাষের পদ্ধতি -
পোয়াল ছাতু চাষের জন্য কি কি প্রয়োজন বা উপকরণ গুলি :-
একটি বেড তৈরী করার জন্য প্রয়োজনীয় সরাঞ্জাম গুলো দিচ্ছি:-
১/ আপনার বাড়িতে পড়ে থাকা ১৬-২০ আঁটি খড়।
২/ পোয়াল ছাতুর বীজ (লাস্টে ঠিকানা দিয়ে দোবো )
৩/ একটি প্লাস্টিক পেপার যেনো ৪ হাত লম্বা হয়।
৫/ ৪ টি ইট, ৪ টি শক্ত ৩-৪ হাত লম্বা বাঁশ।
৬/ বেশন বা এটা গুঁড়ি।
মাত্র ৬ টি উপকরণ লাগবে, দিলেই আপনি সুন্দর ভাবে কাজ করতে পারবেন। এবার জানা যাক পোয়াল ছাতু চাষের পদ্ধতি
খড় ছাতু চাষের পদ্ধতি গুলো:-
প্রথমে আপনি ১৬ টি খড়ের বিছুলি বা আঁটি নিয়ে নিন। আর খড়ের আঁটির গোড়া দিক ও আগের কিছুটা করে কেটে নিন। এই ভাবে সকল খড়ের আঁটি গুলোকে সমান করে কেটে নিবেন।
দ্বিতীয় :- এই বারে খড়ের আঁটি গুলোকে কোনো বড়ো পাত্রের মধ্যে জল দিয়ে ৮-১২ ঘন্টা ভালো ভাবে ভিজিয়ে নিন।
তৃতীয় :- ৮ -১২ ঘন্টা পরে খড় গুলো তুলে ছায়ায় থাকা কোনো উঁচু জায়গাতে রাখুন, যত ক্ষণ না খড়ের মধ্যে থাকা জল ঝরে পড়া বন্ধ হচ্ছে। জল ঝরা বন্ধ হয়ে গেলে যেখানে বেড তৈরী করবেন সেখানে নিয়ে যান।
চতুর্থ :- এই বারে আপনি ওই চারটি ইট ও ৪ টি বাঁশ দিয়ে একটি মাচা তৈরী করুন, মনে রাখবেন যেনো ছায়ার মধ্যে চাষের বেডটি তৈরী করেন, ডাইরেক্ট যেনো রোদ না পরে বেডের উপরে। মাচাটির মাটি থেকে উচ্চতা যেনো ৭-৮ ইঞ্চি উপর হয়।
পঞ্চম :- এই বারে আপনি প্রথম স্তরে ৪ টি খড়ের আঁটি খুলে বিছিয়ে দিন। দেখবেন বেশী যেনো পাতলা না হয়। এর পরে গোল করে বেশন ছড়িয়ে দিন, আর পোয়াল ছাতুর বীজ গুলো মারবেল সাইজের করে ছড়ানো বেশন এর উপরে রেখে দিন। প্রথম স্তরে যে দিকে খড়ের আঁটির মাথা গুলো ছিলো দ্বিতীয় স্তরে তার উল্টো দিকে খড়ের মাথা গুলি দিন। এই ভাবে সমস্ত স্তর তৈরী করে নিন।
ষষ্ঠম:- বেড তৈরী হয়ে গেলে প্লাস্টিক এর পেপার দিয়ে ভালো করে ঢাকিয়ে দিন। পুরো ৭ দিনের জন্য, ৭ দিন পরে আপনি এই প্লাস্টিক পেপার খুলে দিবেন ২-৩ ঘন্টার জন্য, পরে আবার ঢাকা দিবেন। এর পরে এই ভাবে প্রতিদিন ২ থেকে ৩ ঘন্টা করে প্রতিদিন খুলে রাখবেন।
দেখবেন যদি খড়ের ওপরের দিক শুকিয়ে যায় তবে আপনি হালকা স্প্রে করবেন। এই সামান্য পরিশ্রম এ ৮-১০ দিনের মধ্যে আপনার পোয়াল ছাতু তৈরী হওয়া শুরু করবে।
পোয়াল ছাতুর বীজ কোথায় পাবেন :-
পোয়াল ছাতুর বীজর বীজ দুই ধরনের পেকেট হয় যেমন- কাচের বোতল ও প্লাস্টিক পেকেট। যদি আপনি নিকটবর্তী এগ্রিকালচার সেন্টার বা কোনো ফার্ম থেকে নেন তবে বোতল পাবেন। আর যদি অনলাইনে কিনেন তবে, আপনি প্লাস্টিক পেকেট পাবেন।
পোয়াল ছাতুর বীজ যদি আপনার এলাকায় কোনো এগ্রিকালচার সেন্টার থাকে সেখানে যোগাযোগ করবেন। না হলে আমি নীচে কিছু লিঙ্ক দিচ্ছি আমাজন বা ফ্লিপকার্ট থেকে পেয়ে যাবেন :-
Amazon থেকে কিনতে চাইলে এই লিঙ্ক 👉🏾 এখানে ক্লিক করুন
Flipkart থেকে নিতে চাইলে 👉🏾 এখানে ক্লিক করুন
অবশ্যই পোয়াল ছাতুর ছবি দেখে কিনবেন 👍🏾
যদি বুঝতে কোনো প্রবলেম হয়ে থাকে তবে আপনারা এই ভিডিও টি দেখতে পারবেন 👉🏾 এখানে ক্লিক করুন
পোস্ট টি শেয়ার করে বন্ধু ও আত্মীয় দের দেখার সুযোগ করে দিবেন 🙏🏾🙏🏾🙏🏾


0 Comments